‘সমতাভিত্তিক সমাজের পথে যাত্রা’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে (বিসিএফসিসি) শুরু হলো তিন দিনব্যাপী জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা সম্মেলন-২০২৫।
বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত এই সম্মেলনটিতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের সোশ্যাল সিকিউরিটি পলিসি সাপোর্ট (এসএসপিএস) প্রোগ্রাম এবং অর্থায়নে অস্ট্রেলিয়া সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড (ডিএফএটি)।
তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী, শিক্ষাবিদ ও সিভিল সোসাইটি নেতারা অংশ নিচ্ছেন।
জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল (২০১৫–২০২৬) শেষ পর্যায়ে পৌঁছানোয় এবং আগামী প্রজন্মের জন্য নতুন কাঠামো প্রণয়নের প্রাক্কালে এ সম্মেলনকে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ হাসান, যেখানে তিনি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অধিকারভিত্তিক সামাজিক সুরক্ষা কৌশলের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষা শুধু অর্থনৈতিক চাহিদা নয়, এটি একটি নৈতিক দায়িত্ব। একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতিতে বাংলাদেশকে অবশ্যই এমন একটি সর্বজনীন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যা সবার মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ’
তিন দিনের এই সম্মেলনে আলোচনায় আসবে গত এক দশকের সংস্কার অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যতের অগ্রাধিকার: অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাতা, শ্রম ও জীবিকা সহায়তা, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় অভিযোজনমূলক পদক্ষেপ এবং জেন্ডার -সংবেদনশীল কৌশল। এ ছাড়া সেশনগুলোতে গুরুত্ব পাবে ডিজিটাল উদ্ভাবন যেমন ডায়নামিক রেজিস্ট্রি ও শক-রেসপন্সিভ সিস্টেম, যা স্থিতিশীলতা তৈরি ও সেবা প্রদানে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর প্রতীক ফারুক ই আজম বলেন,‘অভিযোজনযোগ্য ও শক-রেসপন্সিভ সামাজিক সুরক্ষা কোনো বিকল্প নয়; এটি স্থিতিশীলতার ভিত্তি। বাংলাদেশে সামাজিক সুরক্ষার যাত্রা শুরু হয়েছিল দুর্যোগ মোকাবিলা থেকেই, আর আজও দুর্যোগ-সহনশীল কমিউনিটি গড়ে তোলাই সবচেয়ে শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা। ’
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে সামাজিক সুরক্ষা কোনো দয়া নয়; এটি একটি অধিকার এবং রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে সামাজিক চুক্তির স্তম্ভ। বাংলাদেশ যখন আগামী প্রজন্মের কৌশল নির্ধারণ করছে, তখন আমরাও বাংলাদশের পরিবর্তিত সামাজিক-অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে অবদান রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ’
Read More at BanglaNews24